বন্ধুত্ব প্রকাশ হতেই চরম পরিণতি গৃহবধূর : পুড়িয়ে হত‍্যার অভিযোগ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে

7th August 2020 4:35 pm বর্ধমান
বন্ধুত্ব প্রকাশ হতেই চরম পরিণতি গৃহবধূর : পুড়িয়ে হত‍্যার অভিযোগ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :  ফ্রেন্ডশিপ ডে তে ছোটবেলার পুরুষ বন্ধুর সাথে তোলা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন বধূ । তার জেরে প্রান খোয়াতে হল বধূ পায়েল বর্মন (২৫) কে । শ্বাসরোধ করে বধূকে  প্রাণে মেরে পেট্রল ঢেলে দেহ জ্বালিয়ে দেবার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে । নজিরবিহীন  এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা থানার নিচুজাপট পাড়া  এলাকায় । কালনা হাসপাতাল পুলিশ মর্গে বৃহস্পতিবার বধূর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়।বধূর বাবার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে কালনা থানার পুলিশ বধূর শাশুড়ি দিপালী বর্মন কে  গ্রেপ্তার করতে পারলেও বাকিরা সবাই গা ঢাকা দিয়েছে ।পুলিশ তাদের খোঁজ চালাচ্ছে । এদিনই ধৃতকে কালনা মহকুমা আদালতে পেশ করা হয় ।বিচারক  ধৃতকে জেল হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।  
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , কালনা শহরে  বাবার বাড়ি বধূ পায়েল বর্মনের । ভাব ভালবাসা করে বছর ১০ আগে কালনার নিচুজাপট এলাকা নিবাসী যুবক অভিজিৎ বর্মনের সঙ্গে পায়েলের বিয়ে হয় ।দম্পতির নাবালক একটি পুত্র সন্তান রয়েছে । বধূর বাবা পলাশ হালদার পুলিশকে  ডানিয়েছেন,তাঁর জামাই অভিজিৎ  পেশায় ব্যবসায়ী ।  পলাশ বাবুর অভিযোগ বিয়ের পর থেকে জামাই ও তাঁর পরিবারের লোকজন 
পায়েলের উপর শারীরিক ও মানসিক  নির্যাতন চালানো শুরু করে । বাবার বাড়িতেও  পায়েল কে  খুব একটা আসতে দিতনা শ্বশুর বাড়ির লোকজন । পলাশ বাবু জানান,   এবছর জামাইষষ্ঠীর দিন পায়েল বাবার  বাড়ি আসে ।ওই দিন পায়েল ও তাঁর বোন পৌলমি পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যায় ।সেখানেই  ছোটবেলার পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয় পায়েলের ।তারা মোবাইলে  সেলফি তোলে।কয়েকদিন আগে ফ্রেন্ডশিপ ডে ছিল ।  ওই দিন ছোটবেলার বন্ধুর সঙ্গে তোলা সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পায়েল পোস্ট করে। তা নিয়ে অভিজিৎ   চূড়ান্ত অশান্তি শুরু করেদেয় পায়েলের সঙ্গে । পায়েলের উপর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের  অত্যাচার আরো বাড়িয়ে দেয়।  এরপর বুধবার বিকেলে পায়েল ও তাঁর পরিচিত কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে অভিজিৎ পায়েলের বাবার বাড়ি পৌছায় ।সেখানেও ওই  সেলফি নিয়ে  চরম অশান্তি করে অভিজিৎ তাঁর স্ত্রী পায়েলকে নিয়ে নিজের  বাড়ি ফিরে যায়।  পলাশ বাবু বলেন , বুধবার রাতে তারা  জানতে পারেন পায়েল শ্বশুর বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়েছে । এই খবর পেয়েই তারা  দ্রুত  মেয়ের শ্বশুর বাড়ি পৌছে দেখেন , শ্বশুর বাড়ির বাথরুমে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে পায়েলের দেহ। আর গা ঢাকা দিয়েছে পায়েলের স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির সকল সদস্যরা ।পলাশ বাবু জানান ,তাঁরাই অগ্নিবগ্ধ পায়েলকে উদ্ধার করে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান ।  সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পায়েলকে  মৃত বলে জানান ।কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করে পলাশ বাবু পুলিশ কে জানিয়েছেন,ছোট বেলার বন্ধুর সঙ্গে সেলফি তোলা মেনে নিতে না পেরে জামাই ও শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা  পায়েলকে প্রাণে মেরে দেহে জ্বালিয়ে দিয়েছে । 
মেয়ের মৃত্যুর জন্য জামাই সহ শ্বশুর বাড়ির সকল সদস্যদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন পায়েলের বাবার বাড়ির সদস্যরা ।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।